আপন দেশ। ফাইল ছবি
আন্দোলন ছিল টানটান উত্তেজনাকর। আল্টিমেটাম ছিল চারদিনের। এ সময়ের মধ্যে বাজার ভালো না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি ছিল। কিন্তু ঘোষণার তিন দিনের মাথায় আন্দোলন উল্টো পথে। তপ্ত আন্দোলনে বরফ পড়েছে। কর্মসূচি স্থগিত। আপন দেশ’কে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদ নেতারা।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, বাজার স্থিতিশীল ও গতিশীল করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি। কমিশন আমাদের আশ্বস্ত করেছে। বাজার ভালো করতে যা যা করা দরকার, কমিশন তা করবে। এজন্য আন্দোলন স্থগিত।
এদিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী (দাবিকৃত) এ সংগঠনের সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে তা বাজারই বলে দেয়। গত কার্যদিবসের তুলনায় আজ (২৪ মার্চ) সূচকের পাশাপাশি টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মন্তব্য, তাদের নিয়ে নীতিনির্ধারক, আন্দোলনকারী সবাই ইঁদুর-বিড়াল খেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি টানা ৮ দিন দরপতনের পর গত ১৯ মার্চ রাজধানীর মতিঝিলের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিল্ডিংয়ের সামনে মানববন্ধন করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের ব্যানারে মানববন্ধনে তারা বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, আগামী এক বছরের মধ্যে কোনো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেয়া যাবে না।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বাজারের উন্নয়নে মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকার্স হাউজ, ট্রেকহোল্ডার ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) কোনো অবদান রাখছে না। তাদেরকে জবাবদিহীতার আওতায় আনতে হবে। মানববন্ধন থেকে আগামী সোমবারের (২৫ মার্চ) মধ্যে বাজার ভালো না হলে, লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ার বাজার। ডিএসইতে এদিনে ৬০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। আর ডিএসই প্রধান সূচক-ডিএসইএক্স গিয়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯৪২ পয়েন্টে। এ চিত্রেই বাজার নিয়ে আন্দোলনকারীরা আশাবাদী হচ্ছেন। আন্দোলনের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
আন্দোলনকারীদের মতে, বর্তমানে মার্কেট কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। আগামীতে আরও স্থিতিশীলতার পাশাপাাশি দ্রুতই গতিশীল হবে। তাই আন্দোলন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের সভাপতি মিজান-উর রশিদ চৌধুরী জানান, বাজারকে গতিশীলতায় ফিরাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি। কমিশন আমাদের আশ্বস্ত করেছে, বাজার ঠিক করতে যা যা করা দরকার, কমিশন তাই করবে। কমিশন আপাতত আইপিও অনুমোদন দেবে না। কমিশন বলেছে, মার্কেট ক্ষতিকারকদের আইনের আওতায় আনবে। আমরা কমিশনের কথায় আশ্বস্ত হয়েছি।
তাছাড়া বর্তমানে বাজারে গতিশীলতা কিছুটা বেড়েছে। আমরা আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছি। তবে বাজার পরিস্থিতি আবারও খারাপ হলে, লাগাতার আন্দোলনে যাব- যোগ করেন মিজান-উর রশিদ চৌধুরী।
বিএসইসির মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম আপন দেশ’কে বলেন, বাজার ভালো করতে যত ধরনের পলিসি সাপোর্ট প্রয়োজন তা কমিশন দেবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কমিশন আশ্বস্ত করেছে, মার্কেট খুব দ্রুতই ঘুরে দাঁড়বে। আপাতত কমিশন আইপিও অনুমোদন দিচ্ছে না। তবে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের দাবি অনুযায়ী আগামীতে ভালো মানের আইপিও অনুমোদন দেয়া হবে। আর যারা মার্কেটের ক্ষতি করছে, তাদের ব্যাপারে কমিশন যথেষ্ট কঠোর। প্রয়োজনে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রোববার (২৪ মার্চ) ডিএসই প্রধান সূচক-ডিএসইএক্স ৪০ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯০১ পয়েন্টে। শরিয়াহ্ সূচক- ডিএসইএস ৮ পয়েন্ট কমে এবং ডিএস-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১ হাজার ২৮৫ ও ২ হাজার ৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
আজ ডিএসইতে মোট ৫৮০ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এদিন লেনদেন হয়েছে ৩৯৭টি কোম্পানির। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৫টির, কমেছে ৩০৪টির এবং শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির।
আপন দেশ/টি/এবি/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।