ছবি: সংগৃহীত
লোকসান গুনতে গুনতে কারো মূলধন তলালিতে। আবার লোনের কেনাবেচা করায় মাইনাসে পোর্টফোলিও। লোকসান ঠেকাতে বা লোনের সুদ মেটাতে শেষ সম্বল বিক্রির নজিরও আছে। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে শুধু লোকসান আর লোকসান। লাভের মুখ না দেখে হতাশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারী। এ পথে হাঁটার আগে হাজারো হিসাবধারী বাজার থেকে চলে যাচ্ছে।
ফলে শেয়ার দর, সূচক, লেনদেন, মূলধন, বিও অ্যাকাউন্ট সবকিছুরই পতন ঘটছে। এ হচ্ছে দেশের শেয়ার বাজারের চিত্র। তবে এখন পর্যন্ত বাজারে বিনিয়োগকারী ধরে রাখার জন্য বেশ কিছু কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর মধ্যে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড অন্যতম।
কোম্পানি সচিব এফ. মো. সালেহিন আপন দেশ’কে বলেন, আমাদের প্রত্যেকের জবাবদিহীতা রয়েছে। তাই আমরা কোম্পানির উন্নয়নে সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের ব্যাপারে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ, ম্যানেজমেন্ট যথেষ্ট আন্তরিক। তাদের দ্বারা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি অতীতেও হয়নি, আগামীতেও হবে না, এমনটাই আমার বিশ্বাস।
কোম্পানিটির খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে বিনিয়োগকারীকে হতাশ করেনি সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। সুনাম ধরে রাখতে কর্মদক্ষতা, সততা ও উদ্যোমের সঙ্গে কোম্পানিটি পরিচালনা করছে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। ব্যবস্থাপনা পর্ষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকলেই কোম্পানিটির ব্যাপারে আন্তরিক। প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেয়ার জন্য, লাভজনক করতে শ্রমিক থেকে শুরু করে শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। যার ফলে গত পাঁচ বছরের হিসাব অনুযায়ী কোম্পানিটি কোনো লোকসানে পড়েনি। মাঝে করোনাকালীন অনেক কোম্পানি লোকসান করলেও সাইফ পাওয়ারটেক তার প্রফিট ধরে রেখেছিল। আগামীতেও এ প্রফিট বাড়বে বৈ কমবে না- এমন আশা পর্ষদ কর্তাদের।
এদিকে শুধু বাজারই নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও সাইফ পাওয়ারটেক বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, খেলাধুলা, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করে কোম্পানিটি। করোনাকালীন অনেক কোম্পানি টিকে থাকতে কর্মী ছাঁটাই করেছে। বেতন বোনাস ঠিকভাবে দেয়নি। কিন্তু সাইফ পাওয়ারটেক বৈরীকালেও কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করেনি। যথাযথ সুযোগ-সুবিধা সঠিকভাবে পেয়েছে।
আরও পড়ুন>> রেল আরও আধুনিক ও সমৃদ্ধ হচ্ছে
কোম্পানিটির প্রোফাইল থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকেই কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ট দিয়ে আসছে। গত পাঁচ বছরের হিসাব মতে, ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও ৮ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ট, ২০১৯ সালে ৪ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড, ২০২০ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও একই পরিমাণ স্টক ডিভিডেন্ড, ২০২১ সালে ১০ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ও ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ বিনিয়োগকারীদের দিয়েছে কোম্পানিটি।
২০২৩ সালে সাইফ পাওয়ারটেক বিনিয়োগকারীদের সন্তোষজনক ডিভিডেন্ড দিবে-এমন আশা কোম্পানির শীর্ষ কর্তাদের।
সূত্রটি জানায়, গত বছরের শেষের দিকে মহাখালীর খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ টাওয়ারে কোম্পানিটির অফিস রয়েছে। কোম্পানিটির একাধিক অঙ্গ ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান রয়েছে বিভিন্ন ফ্লোরে। অগ্নিকাণ্ডে কোম্পানিটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফলে সে সময় কোম্পানিটি আর্থিকভাবে একটু দোটানায় পরে। তবে এখন আবারও সহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
কোম্পানি সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রায় ২৭ বছর ধরে দেশে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে সাইফ পাওয়ারটেক। প্রকৌশল খাতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক সুনাম রয়েছে। চট্টগ্রাম ও দুবাইয়ের বন্দরের মালামাল হ্যান্ডেলিং, নদী খনন, ব্যাটারি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, পুনঃনবায়নযোগ্য জ্বালানি, এলইডি লাইটিং সলিউশন, ফার্মাসিউটিক্যালসের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনসহ নানাবিধ ব্যবসা রয়েছে কোম্পানিটির।
উল্লেখ্য, সাইফ পাওয়ারটেকের বর্তমান শেয়ার দর ২০ টাকা। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৩৭৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পারিচালকদের শেয়ার রয়েছে ৪০ দশমিক ০৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার রয়েছে ১৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার রয়েছে ৪২ দশমিক ১০ শতাংশ।
আপন দেশ/টি/এবি/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।